একটি সেমিনারে সাবেক একজন সচিব অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ নিজের কাছে থাকার দাবি সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নয়। শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় অ্যাসোসিয়েশন।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। দৃশ্যমান সংস্কার কার্যক্রমসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, মহাসচিব ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সেই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন শুক্রবার (৮ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেখানে আট উপদেষ্টা বিষয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। সাবেক এ সচিব বর্তমানে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি।
আরও পড়ুন
আব্দুস সাত্তার বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার সীমাহীন দুর্নীতির প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। আমলাদের চরিত্র না হয় খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু জুলাই আন্দোলনের রক্তের ওপর দিয়ে চেয়ারে বসা অন্তত আটজন উপদেষ্টার সীমাহীন দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ দিতে পারবো। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আট উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
এই আট উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও বদলি হয় না বলে সাত্তার দাবি করলেও ওই উপদেষ্টাদের নাম বলেননি তিনি।
শনিবার সন্ধ্যার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ এক বিবৃতিতে আব্দুস সাত্তারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কারও অসদাচরণের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ থাকলে তা যথাযথ আইনগত ও তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এরপরই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সেখানে বলা হয়, গতকাল আয়োজিত সেমিনারের বিষয়বস্তু সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। পাঠানো বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও দু-একটি গণমাধ্যমে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ ও বিষয়বস্তুর বাইরে উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যা অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য নয়।
অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত সেমিনার একটি একাডেমিক বিষয়। এতে বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞজনেরা দেশের জনপ্রশাসনের গতিপ্রকৃতি ও প্রত্যাশা নিয়ে তাদের নিজস্ব বক্তব্য দেন, অ্যাসোসিয়েশনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার আলোকে আগামী দিনের জনপ্রত্যাশার ও জনপ্রশাসন নিয়ে অনেক ইতিবাচক-নেতিবাচক, আত্মসমালোচনা ও গঠনমূলক বক্তব্য, পরামর্শ ও প্রত্যাশা উঠে আসে। সেমিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের চার জন সদস্যও তাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। অ্যাসোসিয়েশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়। এটাই অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য।
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। দৃশ্যমান সংস্কার কার্যক্রমসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে।
আরএমএম/এমআইএইচএস
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/Oc2mh4F