Type Here to Get Search Results !

আর্তনাদ শুনে সাহায্য করতে এসে ছুরিকাঘাতের শিকার শিক্ষক

রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষককে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে একজন ছাত্রী (১৬)। মঙ্গলবার দুপুরে ক্লাস শেষে বের হয়ে যাচ্ছিলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক মারুফ কারখী। এ সময় কলেজের প্রধান ফটকের সামনে প্রকাশ্যে ওই ছাত্রী উপর্যুপরি তাকে ছুরিকাঘাত করে।

আহত ওই শিক্ষককে পরে উদ্ধার করে সিএমএইচে নেওয়া হয়। জানা যায়, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত মেয়েটিকে ২০২৩ স্কুল থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের প্রধান ফটকের সামনে একটি মেয়ে হেল্প হেল্প! বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়াচ্ছিল। এ সময় শিক্ষক মারুফ মোটরসাইকেল নিয়ে তার দিকে এগিয়ে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েটি মারুফের গলা লক্ষ্য করে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মারুফ কারখীকে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল- সিএমএইচে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

ঘটনার পরপরই মেয়েটিকে ঘিরে রাখে উপস্থিত লোকজন। ঘটনার পর স্কুলের সামনে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা চিৎকার ও দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে স্কুল ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পরিবারের জিম্মায় মেয়েটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ধারণ করা মেয়েটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা যায়, রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় মেয়েটি একজন শিক্ষকের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুক চালাতো। ওই ফেসবুক আইডি থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীদের এবং ক্লাসের মেসেঞ্জার গ্রুপে অশ্লীল ছবি পাঠাতো। তবে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তার বাবা-মাকে জানানো হয়েছিল। তখন বয়স কম হওয়ায় শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পরও সে একই কাজ করে। পরে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালে তাকে স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট-টিসি দেওয়া হয়। সে এখন বিজিবি পরিচালিত শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

আহত শিক্ষক মারুফ কারখী বলেন, আমি স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখি চিৎকার করতে করতে মেয়েটি দৌড়ে আসছে। তাকে দেখে আমি ভাবছিলাম, ছিনতাইকারীরা হয়তো তার ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ধরতে মোটরসাইকেল দরকার। এজন্য হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছে সে। আমি তাকে না চিনেই দ্রুত এগিয়ে যাই। আর তখনই সে অতর্কিতভাবে আমার গলা লক্ষ্য করে ছুরিকাঘাত করে। হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে গুরুতর জখম হই। পরে সিএমএইচে গেলে গলায় তিনটি এবং হাতে ৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বাসায় বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি তার টার্গেটে ছিলাম তা মনে হয় নি। তবে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে সে। উন্মাদের মতো সে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে করতে বলছিল, ক্যান্ট স্কুলের যাকে পাবো, তাকেই মারবো। এ ঘটনার পর মেয়েটির পরিবার তাকে নিয়ে গেছে। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা শাহিন নূর রেজার সঙ্গে মোকবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার গাজিউর রহমান জানান, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে বাইরে প্রধান ফটকের সামনে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ নিয়ে থানায় এখনো কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাখাওয়াত হোসেন/এএমএ



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/FMCPByn

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.